পাগল কে? খলিফা হারুন অর রশীদ নাকি বাহলুল পাগল
খলিফা হারুন অর রশীদ ও বাহলুল পাগল এর মধ্যকার একটি সত্য ঘটনা। তখন (৭৮৬ - ৮০৯খ্রি. ) বাহলুল নামে এক পাগল ছিল । যে অধিকাংশ সময় কবরস্থানে কাটাতো । কবরস্থানে থাকা অবস্থায় একদিন বাদশাহ হারুনুর রশীদ, তার পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন.....
বাদশাহ তাকে ডাক দিলেন: বাহলুল ! ওই পাগল ! তোর কি আর জ্ঞান ফিরবে না ?
বাহলুল বাদশাহর এ কথা শুনে নাচতে নাচতে গাছের উপরের ডালে চড়লেন এবং সেখান থেকে ডাক দিল: হারুন ! ওই পাগল ! তোর কি কোনদিন জ্ঞান ফিরবে না ?
বাদশাহ গাছের নিচে এসে বাহলুলকে বললেন, আমি পাগল নাকি তুই, যে সারা দিন কবরস্থানে বসে থাকে ? বাহলুল বলল, আমিই বুদ্ধিমান ।
বাদশাহ: কীভাবে?
বাহলুল রাজপ্রাসাদের দিকে ইঙ্গিত দিয়ে বললেন: আমি জানি এই রঙ্গীলা দালান ক্ষণিকের আবাসস্থল, এবং এটি (কবরস্থান) স্থায়ী নিবাস; এজন্য আমি মরার পূর্বেই এখানে বসবাস শুরু করেছি । অথচ তুই গ্রহণ করেছিস ঐ রঙ্গশালাকে আর এই স্থায়ীনিবাসকে (কবর) এড়িয়ে চলছিস ।
রাজপ্রসাদ থেকে এখানে আসাকে অপছন্দ করছিস !
যদিও তুই জানিস এটাই তোর শেষ গন্তব্য ।
এবার বল, আমাদের মধ্যে কে পাগল ?
বাহলুলের মুখে এ কথা শোনার পর বাদশাহর অন্তর কেঁপে উঠল, তিনি কেঁদে ফেললেন। তাঁর দাড়ি ভিজে গেল ।
তিনি বললেন: আল্লাহ'র কসম ! তুমিই সত্যবাদী । আমাকে আরও কিছু উপদেশ দাও !
বাহলুল: তোমার উপদেশের জন্য আল্লাহর কিতাবই যথেষ্ট । তাকে যথার্থভাবে আকড়ে ধর ।
বাদশাহ: তোমার কোন কিছুর অভাব থাকলে আমাকে বল, আমি তা পূরণ করব ।
বাহলুল: হ্যা, আমার তিনটি অভাব আছে, এগুলো যদি তুমি পূরণ করতে পার তবে সারা জীবন তোমার কৃতজ্ঞতা স্বীকার করব ।
বাদশাহ: তুমি নিঃসঙ্কচে চাইতে পার ।
বাহলুল: মরণের সময় হলে আমার আয়ূ বৃদ্ধি করতে হবে ।
বাদশাহ: আমার পক্ষে সম্ভব নয় ।
বাহলুল: আমাকে মৃত্যুর ফেরেশতা থেকে রক্ষা করতে হবে ।
বাদশাহ: আমার পক্ষে সম্ভব নয় ।
বাহলুল: আমাকে জান্নাতে স্থান করে দিতে হবে এবং জাহান্নাম থেকে আমাকে দূরে রাখতে হবে ।
বাদশাহ: আমার পক্ষে সম্ভব নয় ।
বাহলুল: তবে জেন রাখ, তুমি বাদশাহ নও বরং তুমি গোলাম।
অতএব, তোমার কাছে আমার কোন চাওয়া বা প্রার্থনা নেই ।