গণিত ও মানষিক দক্ষতায় ভালো করার উপায়

ক) সাধারণ গণিত বিসিএস পরীক্ষার অন্যতম অংশ। প্রিলিমিনারিতে ১৫ নম্বর বরাদ্দ আছে। যার তিনটি অংশ; পাটিগণিত, বীজগণিত ও জ্যামিতি।


খ) বাস্তব সংখ্যা অংশে মূলদ, অমূলদ, মৌলিক, সহ মৌলিক, ঋণাত্মক সংখ্যা চেনার উপায় ভালো করে শিখবেন। তা ছাড়া ১ থেকে ১০০ পর্যন্ত কতগুলো মৌলিক সংখ্যা আছে জেনে নেবেন। ২৫টি আছে।

গ) গণিত হচ্ছে অনেকটা মইয়ের মতো। ধাপ বাদ দিলে ওপরে উঠতে অসুবিধা। আর বেশি করে ধাপ এড়িয়ে গেলে ওঠাই অসম্ভব হয়ে পড়ে। তাই ধাপে ধাপে গণিতে ভালো করার চেষ্টা করতে হবে। বর্গের সূত্র না জেনে মান নির্ণয় করা যাবে না।

ঘ) অঙ্কগুলো করার সময় আপনার অনেক ভুল হয় বা হবে। সে ভুলগুলো নিয়ে একটু ভাবুন। প্রতিটা ভুল বিশ্লেষণ করুন ও বোঝার চেষ্টা করুন। আর যদি ধরতে পারেন তবে অঙ্ক শিখে গেছেন। সময় একটু লাগলেও যা শিখলেন তা মাথায় থাকবে।

ঙ) গণিতের ভিত্তি ধরতে হবে বোর্ডের গণিত বইগুলোকে। বিশেষ করে সপ্তম, অষ্টম ও নবম-দশম শ্রেণির বইগুলো। গণিত চর্চা শুরু করতে হবে নিচের শ্রেণি থেকে ওপরের শ্রেণি পর্যন্ত। যেমন প্রথমে সপ্তম, পরে অষ্টম ও তারপর নবম-দশম শ্রেণি। বোর্ড বইগুলো সমাধান করার সময় কঠিন অঙ্কগুলো মার্ক করে রাখবেন। পরেরবার করার সময় শুধু ওই মার্ক করাগুলো করলেই হবে।

চ) কিছু অধ্যায় তুলনামূলকভাবে একটু বেশি গুরুত্ব দিয়ে করতে হবে। যেমন সুদকষা, শতকরা, লাভ ও ক্ষতি, অনুপাত-সমানুপাত, বর্গমূল, উৎপাদক, সূচক, ধারা, সেট ইত্যাদি।

ছ) পরিমাপসংক্রান্ত সমস্যা সহজে সমাধান করতে গণনা পদ্ধতি ও এককসমূহ জানতে হবে। যেমন ১ বিঘায় কত কাঠা, ১ কেজিতে কত পাউন্ডএসব আরকি।

জ) গণিতের বিভিন্ন অংশের সূত্রগুলো ভালো করে পড়ে নেবেন। প্রয়োজনে একটা নোট তৈরি করে নেবেন যেখানে সব সূত্র এক জায়গায় থাকবে। অনেক সময় সূত্র থেকেও দুএকটি প্রশ্নের উত্তর করা যায়। তা ছাড়া সূত্র বা নিয়ম ছাড়া অঙ্ক মেলাতেও পারবেন না।

ঝ) গণিতের যে অংশটি ভালো করে পারেন, তা যেন আয়ত্তে থাকে খেয়াল রাখবেন। অন্য অংশটি কম পারলেও যেন তা কাভার করা যায়।

ঞ) অনুশীলন ব্যতীত গণিতে ভালো করা যায় না। তাই প্রতিদিন এক থেকে দেড় ঘণ্টা সময় গণিত অনুশীলন করার জন্য বরাদ্দ রাখুন। আর বিগত বছরের গণিত প্রশ্নগুলো ভালো করে সবার আগে সমাধান করে নেবেন।

ট) কিছু গণিত শর্টকাটে করবেন। কারণ, আপনি সব সময় বিস্তারিত করার সময় পাবেন না। তবে সব আবার শর্টকাট করতে যাবেন না।

ঠ) অতি কঠিন মাত্রার গণিত বিশেষ করে জিআরই, জিম্যাট থেকে অনুশীলন করার প্রয়োজন নেই। প্রিলিমিনারিতে এত কঠিন গণিত প্রশ্ন হয় না।

ড) গণিতে বেশি দুর্বল হলে বন্ধুদের নিয়ে গ্রুপ স্টাডি করতে পারেন। এ ক্ষেত্রে গণিতে দক্ষ বন্ধুকে বেছে নিন। অন্য বিষয়ের চেয়ে গণিতের গ্রুপ স্টাডি বেশি কাজে দেয়।

ঢ) যদি বিশেষ কোনো অধ্যায় যেমন সময় ও স্রোতএর গণিত আয়ত্ত করতে না পারেন, ছেড়ে দিন। ওই অধ্যায় থেকে প্রশ্ন নাও আসতে পারে। এতে কিছুটা ঝুঁকিও থাকে।

ণ) গণিতের কোনো অংশকে সহজ মনে করে এড়িয়ে যাবেন না। সমান গুরুত্ব দেবেন। না হলে দেখা যাবে পরীক্ষার হলে গিয়ে আর মেলাতে পারছেন না।

ত) মাঝে মাঝে নিজেকে যাচাই করার জন্য কিছু অধ্যায় ধরে পরীক্ষা দেবেন। এটা আপনার করণীয় ঠিক করতে সাহায্য করবে।

থ) একটা আশার কথা হলো, গণিতের একটা সীমানা আছে। মৌলিক নিয়মগুলো ভালো করে জানলে কমনসেন্স দিয়ে অনেক ম্যাথ সমাধান করা সম্ভব।

দ) জ্যামিতি অংশটি বোর্ডের বই থেকে না পড়লেও চলবে। কারণ, প্রিলিমিনারিতে জ্যামিতির খুব গভীর থেকে প্রশ্ন হয় না বা করার সুযোগও থাকে না। তাই এই অংশের জন্য একটা গাইড অনুসরণ করলেই হবে।

ধ) কোণ, ত্রিভুজ, চতুর্ভুজ এবং তাদের প্রকারভেদের বিস্তারিত তাত্ত্বিক দিকগুলো ভালো করে পড়বেন। সঙ্গে তার ক্ষেত্রফল বা আয়তন নির্ণয়ের সূত্রও।

ন) মানসিক দক্ষতা অংশে ১৫টি প্রশ্ন থাকবে। একটা কথা মনে রাখতে হবে যে বাংলা, ইংরেজি, সাধারণ জ্ঞান, চিত্র, গণিত, মনস্তাত্ত্বিক বিষয় ও কমনসেন্স বিষয়ক প্রশ্ন হয়ে থাকে এই অংশে। অর্থাৎ এটাও প্রিলির মধ্যে আরেকটা ছোটখাটো প্রিলি। আপনি যদি অন্যান্য অংশে ভালো করে প্রস্তুতি নেন, তবে মানসিক দক্ষতা অংশেও ভালো করবেন।

প) প্রথমে বিগত প্রিলিমিনারির প্রশ্নগুলো পড়ে নেবেন। এরপর ২৭তম বিসিএস থেকে সর্বশেষ অনুষ্ঠিত বিসিএস লিখিত পরীক্ষার মানসিক দক্ষতার প্রশ্নগুলো পড়ে ফেলবেন। বুঝে বুঝে পড়বেন। অনেকেরই জানা আছে, লিখিত পরীক্ষায় ৫০টি এমসিকিউ টাইপ প্রশ্ন হয়।

ফ) এতে মানসিক দক্ষতা সম্পর্কে আপনার একটা পূর্ণাঙ্গ ধারণা হয়ে যাবে। এগুলো পেতে একটা গাইড সংগ্রহ করে নেবেন। ওরাকল হতে পারে।

ব) কিছু বিষয় একটু ভালো করে পড়বেন। যেমন বাংলা বানান, ইংরেজি বানান, অ্যানালজি, সিরিজ, দূরত্ব নির্ণয়বিষয়ক সমস্যা, চিত্রভিত্তিক সমস্যা বিন্যাস ও সমাবেশ, শূন্যস্থান পূরণ, বছর নির্ণয় ইত্যাদি।

ভ) অনুশীলন করার সময় প্রশ্নের প্যাঁচটা বোঝার চেষ্টা করুন। তাড়াহুড়ো করে না বুঝে অধ্যায় বা বই শেষ করতে যাবেন না। এতে তেমন লাভ হবে না।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url